মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:১১ পূর্বাহ্ন

মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বন্ধু ফাদার রিগন বাংলাদেশের সংস্কৃতির প্রেমে পড়েছিলেন

নিউজ ডেস্ক:
  • Update Time : বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৩৯ Time View

মো:নূর আলম(বাচ্চু),মোংলা প্রতিনিধি :

ধর্ম প্রচার ও কল্যাণমূলক কর্মকান্ডকে ছাপিয়ে ফাদার রিগনকে বিশিষ্ট করে তুলেছে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি তাঁর তীব্র অনুরাগকে। তিনি বলতেন আমার মস্তকে রবীন্দ্রনাথ অন্তরে লালন। লালন সঙ্গীতের মধ্যে তিনি ঐশ্বরিক অনুভূতি খুঁজে পেয়েছিলেন। ফাদার রিগন ধর্মজীবন এবং শিল্পজীবনকে পৃথক ভাবে দেখেননি। আমরা যখন পশ্চিমা সংস্কৃতিতে আসক্ত হচ্ছি, তখন মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বন্ধু ফাদার রিগন বাংলাদেশের সংস্কৃতির প্রেমে পড়েছিলেন।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় মোংলার শেলাবুনিয়াতে মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বন্ধু কবি-সাহিত্যিক ফাদার মারিনো রিগনের জন্মশতবার্ষিকীর স্মরণানুষ্ঠানে বক্তারা একথা বলেন।

মোংলা সরকারি কলেজ, উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, মোংলা নাগরিক সমাজ, ফাদার রিগন শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, সেন্ট পলস উচ্চ বিদ্যালয়, সেন্ট পল্স ধর্মপল্লী, ফাদার রিগন ক্রীড়া সংস্থা ও প্রথম আলো বন্ধুসভার আয়োজনে এ স্মরণানুষ্ঠন হয়।

উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি’র সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফিয়া শারমিন’র সভাপতিত্বে স্মরণানুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন মোংলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কে এম রব্বানী।

জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের বক্তৃতা করেন, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও পরিবেশকর্মী মোঃ নূর আলম শেখ, ফাদার রিগন শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সভাপতি সুভাষ বিশ্বাস, সেন্ট পলস ধর্মপল্লীর পালক পুরোহিত ফাদার ফিলিপ মন্ডল, সেন্ট পল্স উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ব্রাদার এন্ড্র জয়ন্ত কস্তা, উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মোল্লা আল মামুন, সেবা সংস্থার নির্বাহি পরিচালক মিনা হালদার, উপাধ্যক্ষ বিভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক মনীন্দ্রনাথ হালদার, ফাদার রিগন ক্রীড়া সংস্থার সঞ্জয় হালদার প্রমূখ।

স্মরণানুষ্ঠানে বক্তারা আরো বলেন, যাজকীয় দায়িত্ব পালন থেকে অবসর নিয়ে ফাদার রিগন বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও সাহিত্যকে ভালোবেসে ইতালিতে ফিরে না গিয়ে তিনি এদেশেই রয়ে যান। উল্লেখ্য ১৯২৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ফাদার রিগন ইতালির ভিল্লাভেরলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৩ সালে ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে ফাদার রিগন বাংলাদেশে আসেন। কয়েক বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে মোংলাতে তিনি স্থায়ী আবাস গড়েন। ফাদার রিগন মোংলা অঞ্চলে সেন্ট পল্স স্কুলসহ ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ফাদার রিগন ইতালি ভাষায় অনুবাদ করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলিসহ ৪০টি বই, লালন সাঁইয়ের ৩৫০টি গান, জসিম উদ্দিনের নক্সীকাঁথার মাঠ, সোজনবাদিয়ার ঘাট ছাড়াও বাংলাদেশের খ্যাতিমান কবিদের অসংখ্য কবিতা। ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর ইতালিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফাদার রিগন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ফাদার রিগনের অন্তিম ইচ্ছানুযায়ি মোংলার শেলাবুনিয়াতে তাঁকে সমাধি করা হয়।

ফাদার রিগনের জন্মশতবার্ষিকীতে স্মরণানুষ্ঠান ছাড়াও শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন, কেককাটা, প্রীতি ফুটবল ম্যাচ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themesba-lates1749691102