মোঃনূর আলম(বাচ্চু),মোংলা প্রতিনিধি:
৭০৩টি রিকন্ডিশন্ড গাড়ি নিয়ে জাপান থেকে মোংলা বন্দরে এলো ‘এমভি মালয়েশিয়া স্টার’ নামের একটি জাহাজ। বৃহস্পতিবার (০৪ মে) সকালে মোংলা বন্দরের ৮ নম্বর জেটিতে নোঙর করে মালয়েশিয়ান পতাকাবাহী জাহাজটি। জাহাজ থেকে গাড়িগুলো রাতেই খালাস করা হবে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতির অস্থিতিশীলতার প্রভাব পড়েছিল বাংলাদেশেও। এ অবস্থায় গাড়ি আমদানি কমে যাওয়ায় এক বছরে ৪০০ কোটি টাকা রাজস্ব হারায় মোংলা কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। নতুন করে গাড়ি আমদানি বাড়ায় এ বছর রাজস্ব বাড়বে।
এমভি মালয়েশিয়া স্টার জাহাজের স্থানীয় শিপিং এজেন্ট এনসিয়েন্ট স্টিমশিপের ব্যবস্থাপক মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘চলতি মাসের ১৯ ও ২১ মে দুই বিদেশি জাহাজ আরও গাড়ি নিয়ে মোংলায় আসবে। এপ্রিল মাসে বন্দরে এসেছিল ৫০০টি গাড়ি। আজ ৭০৩টি গাড়ি নিয়ে জাপান থেকে মোংলায় এসেছে একটি জাহাজ। গাড়িগুলো রাতেই জাহাজ থেকে খালাস করা হবে।’
ওয়াহিদুজ্জামান আরও বলেন, ‘আজ যে গাড়িগুলো এসেছে, সেগুলোর মধ্যে এক্সিও, প্রিমিও, অ্যালিয়ন, অ্যাকুয়া, প্রাডো ও মিনিবাসসহ একাধিক ব্রান্ডের গাড়ি রয়েছে। এগুলো জাপান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে মোংলা বন্দরে এসেছে। এর আগে এই চালানের ৫৫৯টি গাড়ি খালাস করা হয়েছিল।’
অর্থনৈতিক সংকটের কারণে গত বছরের আগস্ট থেকে বিলাসবহুল পণ্য আমদানি বন্ধ ছিল উল্লেখ করে ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘এখন সংকট কেটে গেছে। এ জন্য গাড়ি আমদানি বেড়েছে।’
চলতি মাসের ১৯ ও ২১ মে দুই বিদেশি জাহাজ আরও গাড়ি নিয়ে মোংলায় আসবে
বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাবিবুল্লাহ ডন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এতদিন ডলার সংকটে গাড়ি আমদানি করা যাচ্ছিল না। গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ডলার সংকট ছিল। জানুয়ারি মাসের পর ডলার ছাড় করা হয়েছে। এরপর এলসি দেওয়ায় এখন গাড়ি আমদানি করছি আমরা।’
অর্থনৈতিক সংকটের আগে মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মাসে দেড়-দুই হাজার গাড়ি আমদানি হতো উল্লেখ করে হাবিবুল্লাহ ডন বলেন, ‘গত ৮-৯ মাসে তেমন গাড়ি আমদানি করা যায়নি। চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি থেকে ডলার পাওয়ায় এলসি খুলেছি। সেই এলসি করা গাড়িগুলো মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দরে আসছে। ডলার আরও ছাড়লে গাড়ি আমদানি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’
গাড়ি আমদানি কমে যাওয়ায় রাজস্ব কমেছে জানিয়ে এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘দুই বন্দরে বছরে চার-পাঁচ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব দিতাম আমরা। সেখানে গাড়ি আমদানি করতে না পারায় এই খাতে ৫০ শতাংশ রাজস্ব কম পেয়েছে কাস্টমস।’
গাড়ি আমদানি থেকে কাস্টমস বছরে সর্বোচ্চ রাজস্ব পায় বলে জানালেন মোংলা কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার মাহফুজ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘গাড়ি আমদানি কমায় এক বছরে মোংলা কাস্টমসের ৪০০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় কমেছে। এ বছর গাড়ি আমদানি বাড়ায় রাজস্ব বাড়বে।