শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৬ পূর্বাহ্ন

২০ বছর ধরে সেহরিতে রোজাদারদের ডেকে তোলেন সুজন আকন

প্রতিদিন ডেস্ক:
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪
  • ৯৭৯ Time View

মোঃ হাসিবুর রহমান সরদার,বিশেষ প্রতিনিধি:

‘এই সুন্দর ফুল সুন্দর ফল মিঠা নদীর পানি, খোদা তোমার মেহেরবানি’, ‘আল্লাহু আল্লাহু তুমি জাল্লে জালালুহু, শেষ করা তো যায় না গেয়ে তোমার গুণগান’খালি গলায় উচ্চস্বরে বাজনা বাজিয়ে ২০ বছর ধরে প্রতি রমজানে সেহরির সময় ডেকে ডেকে রোজাদারদের ঘুম ভাঙান খুলনা জেলার সোনাডাঙ্গা থানার বয়রা ক্রস রোডের বাসিন্দা মোঃ সুজন আকন। তরুন এই সুজন আকন স্থানীয়দের কাছে বেশ সমাদৃত।

তার ডাকে সাড়া দিয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠে সেহরি খান বয়রা ক্রস রোডের রোজাদাররা। সেহরির সময় বিভিন্ন ধরনের সংগীত বা গজল গেয়ে বাদ্য বাজিয়ে মানুষের ঘুম ভাঙানোর এই রীতি অনেক এলাকায় প্রচলন আছে । বেশিরভাগ জায়গায় দেখা যায় এলাকার মুরব্বিরা এমনভাবে ঘুম ভাঙানোর কাজে লিপ্ত থাকেন।

বয়রা ক্রস রোডের স্থানীয় বাসিন্দা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি জনাব শাকিল খান বলেন সুজন সুরে সুরে খুব যত্ন নিয়ে আমাদের মহল্লার অলিগলি ঘুরে সবাইকে সেহরি খাওয়ার জন্য জাগানোর চেষ্টা করেন।

একটা সময় ছিল, তখন গলায় পেঁচানো গামছায় ঝুলন্ত হারমোনিয়াম, কারও হাতে হ্যাজাক বাতি, কারও হাতে ডুগডুগি, কারও হাতে থাকতো করতাল। সুললিত কণ্ঠে ছন্দময় গলায় বিশেষ এক সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে মহল্লাবাসীকে ঘুম থেকে তুলে সেহরি খাওয়ার আহ্বান জানাতেন একদল লোক। এখন আর সেই দিন নেই। এখন শুধু সুজন আকন একাই মানুষকে সেহরি খাওয়ার জন্য ডাকেন।
পাড়া-মহল্লার অলিগলিতে আজ আর ভেসে আসে না সুরেলা কণ্ঠে সেহরি খাওয়ার আহ্বান। এখন মসজিদের মাইকে, মোবাইল ফোনের অ্যালার্মেই ঘুম ভাঙে। তবে এখনও আমাদের পাড়া-মহল্লায় আছেন সবার পরিচিত মুখ সুজন আকন।

সুজন আকন বলেন,” ২০ বছর ধরে আমি প্রতি রমজানে মানুষকে বিভিন্ন উপায়ে সেহরির সময় ঘুম থেকে জাগানোর চেষ্টা করে আসছি। এটা আমার অভ্যাস হয়ে গেছে। এটা করতে বেশ ভালোই লাগে। আমি কারো বাহবা পাওয়ার জন্য এটা করি না।আল্লাহর সন্তুষ্টি আর রোজাদাররা যেনো ঠিকমতো সময়ে উঠে রোজা রাখতে পারে তার জন্য ই এমন উদ্যোগ আমার।

তিনি আরও বলেন, ঝড়-বৃষ্টি হোক, যাই হোক না কেন বা আমার অসুস্থতা থাকুক, এটা মুখ্য বিষয় না। আমার কাছে সবসময় এই কাজটা প্রাধান্য পেয়েছে। একসময় আমি খালি গলায়, যাদের ফোন নম্বর আছে তাদের ফোন দিয়ে ডেকে তুলতাম। এখন আমাকে অনেকেই বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেন। তিনি নাম উল্লেখ করে বলেন অত্র এলাকার সমাজসেবক আনিছুর রহমান নান্নু দাদা, অভিউর রহমান খান জ্যোতি কাকা, ১৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ এর সাংগঠনিক সম্পাদক রাশেদ সরদার ভাই, খুলনা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি শাকিল খান কাকা, পিডব্লিউডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রদ্ধেয় প্রধান শিক্ষক লিয়াকত হোসেন স্যার আমাকে বিভিন্নভাবে একাজে সহযোগিতা করে থাকেন।এছাড়া খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি এবং খুলনা মহানগর আওয়ামী যুবলীগ এর সাধারণ শেখ শাহজালাল হোসেন সুজন ভাই আমাকে একটা হ্যান্ড মাইক উপহার দিয়েছেন যাতে আমাকে আর খালি গলায় ডাকা না লাগে।”
১৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা রাশেদ সরদার বলেন, “তরুন সুজন আকন যুব সমাজের আদর্শ।সেহরির সময় তো রোজাদারদের ডেকে তোলেই। একাজ ছাড়াও এলাকার যুব সমাজকে মাদক থেকে দূরে রাখার জন্য তাদের জন্য বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করে থাকে। সুজন আকন হাই পাওয়ার বয়েজ ক্লাবের পরিচালক।সে তার সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করেন।”

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themesba-lates1749691102