সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:১৫ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
সার্ভিস বাংলাদেশ’র আয়োজনে নিরাপদ সড়ক দাবীতে লিফলেট বিতরণ ও পথসভা লাকসামে দুর্গাপূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন-বিশিষ্ট শিল্পপতি মো: রাফসানুল ইসলাম আজ থেকে শুরু হচ্ছে ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা পূজা মন্ডবে,কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের টহল ও নজরদারি বৃদ্ধি শরণখোলায় অর্ধগলিত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যা মামলার আসামী সুভাষ মৃধা আটক  শরণখোলা সাংবাদিকদের সাথে বিএনপি নেতা কর্মীদের মত বিনিময় সভা শরণখোলায় নিখোঁজের ১০ দিন পর মৎস্য ঘের থেকে দিনমজুরের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার শরণখোলায় শুকরের আক্রমনে তিন আপন ভাই শরণখোলায় ৭ দিনেও উদ্ধার হয়নি চুরি হওয়া ৫ লক্ষ টাকার রড সুন্দরবনে কুমিরের আক্রমণ,প্রানে বেচে গেলেন ৪ জেলে

সুন্দরবনে নির্মাণাধিন নতুন ৪ ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্রের প্রায় ৩০শতাংশ কাজ শেষ

প্রতিদিন ডেস্ক:
  • Update Time : শনিবার, ৫ মার্চ, ২০২২
  • ৭১৯ Time View

মোঃনূর আলম(বাচ্চু),মোংলা প্রতিনিধিঃ

পর্যটকদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সুন্দরবনে তৈরি করা হচ্ছে নতুন চারটি সুন্দরবন ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র।যার ইতোমধ্যে ৩০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ‘সুন্দরবনে পরিবেশবান্ধব পর্যটন বা ইকো ট্যুরিজম সুবিধা সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় এ ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে।
বনের ভেতর দিয়ে পর্যটকদের অবাধ যাতায়াতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বনের সার্বিক পরিবেশ। পরিস্থিতি বিবেচনায় বনের সৌন্দর্য অবলোকনে নিরিবিলি পরিবেশ সৃষ্টি ও বন্যপ্রাণীদের অবাধ বিচরণ নিশ্চিত করে পরিবশবান্ধব পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তুলতে বন বিভাগ নতুন ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। এখানে বন্যপ্রাণী আর নানা জাতের বৃক্ষরাজি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে আধুনিক পদ্ধতিতে নির্মাণ হচ্ছে মনোমুগ্ধকর স্থাপনা। উন্নত যোগাযোগ আর নিরাপদ পরিবেশের ব্যবস্থা করতে পারলে ইকো ট্যুরিজমে সৃষ্টি হবে নতুন নতুন কর্মসংস্থান। বাড়বে রাজস্ব।

বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনের ভেতরে বর্তমানে মোট সাতটি পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। যেখানে প্রতিবছর প্রায় দুই লাখ পর্যটক ভ্রমণ করে থাকেন। এর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ফলে বর্তমানে থাকা সাতটি স্থানে এত বেশি মানুষের যাতায়াতে ঝুঁকির মুখে পড়ে সুন্দরবনের সার্বিক পরিবেশ। পর্যটকদের পদভারে বনের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো ও তাদের ভ্রমণ আরো সহজ করার জন্য পরিবেশবান্ধব নতুন নতুন স্পট তৈরির উদ্যোগ নেয় বনবিভাগ। এর অংশ হিসেবে ২০২১ সালে সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগে খুলনা রেঞ্জের শেখেরটেক ও কালাবগী এবং সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের আলীবান্ধা ও চাঁদপাই রেঞ্জের আন্ধারমানিকে আরো চারটি পর্যটন স্পট গড়ে তোলার কাজ শুরু করা হয়।

২০২১ সালের ডিসেম্বরে শুরু হওয়া কাজের ইতোমধ্যে ৩০ শতাংশ শেষ হয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর পুরো কাজ শেষ হবে। প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র করা হচ্ছে। প্রাকৃতিক পরিবেশকে ঠিক রেখে পর্যটকদের আসার নতুন স্থান তৈরি করে দেওয়ার জন্য এ প্রকল্প। নতুন এ প্রকল্পের আওতায় সাতটি ফাইবার বডি ট্রলার, তিনটি পন্টুন ও গ্যাংওয়ে, তিন কিলোমিটার আরসিসি সড়ক, ছয়টি পাবলিক টয়লেট, সাড়ে আট হাজার ঘনমিটার পুকুর খনন, একটি সেডশহ প্রদর্শনী ম্যাপ, ৩০টি আরসিসি বেঞ্চ নির্মাণ করা হচ্ছে। পাঁচটি গাইড ম্যাপ, ২০টি ডাস্টবিন ও পর্যটকদের জন্য ১০টি পথ নির্দেশনা তৈরি করা হচ্ছে। প্রকল্পটি সুন্দরবনের পশ্চিম ও সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
নতুন নতুন পর্যটন কেন্দ্র তৈরি হওয়ায় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরাও নতুন আশার আলো দেখছেন। তারা বলছেন, নতুন পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকের সংখ্যা বাড়লে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রসার ঘটবে। পর্যটক বা দর্শনার্থীরা খুব সহজে অল্প সময়ে বনের গহীনের মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।

সুন্দরবন ট্যুর এন্ড ট্রাভেলস এর সত্ত¡াধিকারী মো মিজান বলেন, সুন্দরবনে পর্যটক কেন্দ্র বাড়ায় পর্যটকদের বন দেখার আরো সুযোগ বাড়ছে। বন্যপ্রাণীদের অবাধ বিচরণের মধ্যে নিরিবিলি পরিবেশে বনের সৌন্দর্য অবলোকনের সুযোগ সৃষ্টি হবে নতুন পর্যটন কেন্দ্রে। এতে পর্যটক যেমন বাড়বে তেমনি আমাদেরও ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। সরকারের বাড়বে রাজস্ব।

খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, ভবিষ্যতে সুন্দরবনে ইকো ট্যুরিজম উন্নয়ন করার জন্য সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। সে আলোকে আমরা সুন্দরবনে যে সাতটি ইকো ট্যুরিজম রয়েছে (করমজল, হারবাড়িয়া, কটকা, কচিখালী, দুবলার চর, হিরন পয়েন্ট ও কলাগাছী) সেখানে মূলত ট্যুরিস্টরা যান। এর পাশাপাশি বেশ কিছু জায়গা আমরা সম্প্রসারণ করছি সে আলোকে নতুন চারটি ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র উন্নয়ন কাজ শুরু করেছি। বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার চাঁদপাই রেঞ্জের আন্দারমানিক, শরণখোলা উপজেলার আলীবান্দাতে ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র হচ্ছে। খুলনা জেলার শেখের টেকে যেখানে একটি প্রাচীন মন্দির আছে। সেখানে অনেক পর্যটক যাচ্ছেন। কিন্তু অবকাঠামগত সুবিধা না থাকায় অনেকে আগ্রহ থাকা সত্তে¡ও যেতে পারছেন না। সেখানে একটি ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র তৈরি করার কার্যক্রম চলছে। এছাড়া দাকোপের কালাবগিতে আরও একটি ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে শুরু হওয়া কাজের ইতোমধ্যে ৩০ শতাংশ শেষ হয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর সব কাজ শেষ হবে।

তিনি আরও বলেন, এখানে পর্যটকরা যেন হেঁটে হেঁটে বন দেখতে পারেন সে জন্য ফুড ট্রেল বা হাঁটার রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। পাবলিক টয়লেট, পল্টুন, বসার বেঞ্চ, বৃষ্টি হলে বসার জন্য গোল ঘর তৈরি করা হচ্ছে। পরিবেশ বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের অধীনে বন অধিদপ্তর কর্তৃক প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পের নাম পরিবেশবান্ধব ইকো ট্যুরিজম সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন প্রকল্প। এগুলো সব লোকালয় সংলগ্ন। কটকা, কচিখালী দিনে দিনে গিয়ে ফিরে আসা যায় না যার কারণে সবাই করমজলে যেতে বাধ্য হয়। এজন্য স্থানীয় জনগণ সুন্দরবনে যেতে পারে না। অভয়ারণ্য এলাকায় পর্যটকদের চাপ কমানো এবং স্থানীয় লোকজনকে সম্পৃক্ত করে ইকো ট্যুরিজমের উন্নয়ন করার জন্যই এ চারটি স্থানে ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themesba-lates1749691102