মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:০৯ পূর্বাহ্ন

বাবাকে গুম ও হত্যায় জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতারে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা;বিচার পেতে আর কতদিন লাগবে, প্রশ্ন ছেলের

প্রতিদিন ডেস্ক:
  • Update Time : বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১৮৪ Time View

মো: নূর আলম(বাচ্চু),মোংলা প্রতিনিধি:

জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবি দলের মোংলা উপজেলা কমিটির সভাপতি মাহে আলমকে অপহরণ করে হত্যা করা হয় ২০২৩ সালের ১০ এপ্রিল। এরপর প্রায় দেড় বছরেও তার হত্যা রহস্যের কূল কিনারা উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা হলেও এখন পর্যন্ত কোন আসামিকে গ্রেফতারও করা হয়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে শুরু থেকেই দাবি করা হয়, পূর্বপরিকল্পিত ভাবে অপহরণ করে সুন্দরবনের করমজলে নিয়ে হত্যা করা হয় মাহে আলমকে। তবে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকায় প্রকৃত অপরাধীরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। এই হত্যার বিচার পেতে আর কতদিন লাগবে?

বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর ১২ টায় মোংলা প্রেস ক্লাবে এসে সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের এসব কথা বলে প্রশ্ন রাখেন হত্যার শিকার মাহে আলমের ছেলে সুমন রানা। তিনি বলেন, মোংলা পোর্ট পৌরসভার সি সি টিভি ফুটেজ নিয়ে মোংলা থানায় একটি অপহরণ মামলা করতে গেলে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত ওসি বিকাশ চন্দ্র ঘোষ (বিপি-৮৩১১১৩৫৯৭৬) বলেন, আমি আমার সিনিয়রদের নির্দেশে না পেলে মামলা নিতে পারবো না। পরবর্তিতে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালত নং-০২, মোংলা, বাগেরহাট এর নির্দেশে মোংলা থানা মামলা নংঃ ১৬ তারিখঃ ১১.০৫.২০২৩ খৃষ্টাব্দ ৩৬৪/১১৪/১০৯/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়।

এরপর গত বছরের ৭ এপ্রিল উপজেলার চিলা উনিয়নের বিথীকা নাথের ছেলে হিলটন নাথ (২০) সহ ৩/৪ জন সুন্দরবনের জোংড়া এলাকায় অবৈধভাবে মাছ ধরতে গেলে বনরক্ষীদের অভিযানে হিলটন নাথ (২০) নিখোঁজ হয় এবং ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় সুন্দরবনের করমজলে অর্ধ গলিত একটি মৃতদেহ উদ্ধার হয় যা বিথীকা নাথ ( হিলটন নাথের মা) এবং বেলায়েত সরদার ও বেল্লাল সরদার হিলটন নাথের মৃতদেহ বলে জোর দাবীর প্রেক্ষিতে মৃতদেহ বুঝে নেয়। তবে দীর্ঘ তিন মাস ১০ দিন পর রিপোর্টের মাধ্যমে প্রমানিত হয় যে, হিলটন নাথ বলে সৎকার করা মৃতদেহ মূলত নিখোঁজ হওয়া মাহে আলমের।

মৃত মাহে আলমের ছেলে সুমন রানা আরও বলেন, গত বছরের ১৩ এপ্রিল পুলিশের সুরতহাল রিপোর্টে কেন সত্য লুকানো হলো? কেন সুরতহাল রিপোর্টের সাথে মৃতদেহের সাথে পাওয়া আলামতের কোন মিল নেই? আমার বাবার কাছে থাকা মোবাইল ফোন থেকেই তার পরিচয় পাওয়া যেত। তাছাড়া উত্তোলিত মৃতদেহর পরিধেয় বস্ত্র, আলামত এবং শরীরে কোন কাটাছেঁড়ার চিহ্ন না থাকায় আমরা নিশ্চিত পোস্ট মর্টেম না করে ভূয়া রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। কিন্তু কেন এটি করা হলো?

ভূয়া সুরতহাল রিপোর্ট, ভূয়া পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট, থানায় মামলা না নেয়া, লাশ গুম, হিলটন নাথ হিসেবে সমাধি এসবই প্রমান করে এটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক হত্যাকান্ড। আর এই পরিকল্পনার সাথে নানা ভাবে যুক্ত ছিলেন বা ঘটনাকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করেন আওয়ামীলীগের উচ্চ পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ, সুন্দরবনের সাবেক জলদস্যু বিল্লাল সরদার, বেলায়েত সরদার, বোট মাঝি মোঃ মোশারফ হোসেন, বনপ্রহরী মিজানসহ পুলিশের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা।

আবেগ আপ্লূত হয়ে মৃত মাহে আলমের ছেলে সুমন রানা বলেন, ‘আমি আজ আমার মৃত বাবাকে খুঁজে পেয়েছি। কিন্তু বিচার বিভাগ ও পুলিশ বিভাগের কাছে আমার পিতা মাহে আলমকে অপহরণ, খুন ও লাশ গুমের মামলাটি আওয়ামী ফ্যাসিস্ট রেজিমের প্রভাবমুক্ত করে দ্রুততম সময়ে তদন্ত সম্পন্ন, প্রকৃত অপরাধীদেন গ্রেপ্তারপূর্বক সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী জানাই’।

এদিকে মাহে আলম হত্যার বিচার পেতে, তদন্ত দ্রুত সম্পন্ন এবং মূল অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার বেলা ১১টায় মানববন্ধন করেছে সচেতন নাগরিক সমাজ ও মাহে আলমের পরিবার।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা,মোঃ জসিম উদ্দিন, মাহবুবুর রহমান মানিক, এমরান হোসেন, শেখ রুস্তম আলী, বাবলু ভূইয়া, খোরশেদ আলম, মোঃ আলাউদ্দিন, অধ্যক্ষ মোঃ সেলিম, মোংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আহসান হাবিব হাসান, কমলা বেগম, মোঃ জাহিদ হোসেন, মাহে আলম’র দুই ছেলে সোহেল রানা, সুমন রানা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themesba-lates1749691102