মোঃনূর আলম(বাচ্চু),মোংলা প্রতিনিধি:
মোংলায় বন বিভাগের অভিযানে নিখোঁজ হওয়ার ছয় দিন পর হিলটন নাথের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। পরিবারের সদস্য ও গ্রামবাসী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে করমজলে বনের ভেতরে মরদেহটি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে দাকোপ থানা পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। হিলটনের মৃত্যুর ঘটনায় পরিবার বন বিভাগের বিচার দাবি করেছে।
দাকোপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজ্জল কুমার দত্ত বলেন, হিলটন নাথ নামে এক তরুণের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শেষে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হিলটন উপজেলার চিলা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর চিলা এলাকার মিঠুন নাথের ছেলে। মোংলা ইপিজেডের একটি সিগারেট কোম্পানিতে চাকরি করতেন তিনি।
পরিবারের অভিযোগ, হিলটন ও তার ভাই সাগর নাথসহ আরও কয়েকজন পাস নিয়ে মাছ ধরতে গেলেও পাস ছাড়া মাছ ধরতে যাওয়ার অভিযোগ তুলে অভিযান চালায়। অভিযানে সাগরসহ মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করে বন বিভাগ। অভিযানের সময় হিলটন খালে পড়ে যান। অভিযানের সময় হিলটনকে মারধরের অভিযোগ তুলে তার মৃত্যুর ঘটনায় বন বিভাগকে দায়ী করে বিচার দাবি করেছে পরিবার।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির জানান, গত কয়েকদিন ধরে নিঁখোজ হিলটনের সন্ধান করে আসছিল তার পরিবার ও গ্রামবাসী। বৃহস্পতিবার মৌয়ালরা সুন্দরবনের ভেতরে একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে গ্রামে খবর দেয়। খবর পেয়ে পরিবার ও গ্রামবাসী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে মরদেহটি হিলটনের বলে শনাক্ত করে। পরে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।
আজাদ কবির বলেন, করমজলের ৮ নম্বর খাল থেকে বনের এক কিলোমিটার ও করমজল ফরেস্ট অফিস থেকে বনের সোয়া কিলোমিটার ভেতরে লাশটি পাওয়া যায়।
নিহত হিলটনের চাচা শিপন নাথ বলেন, গত শুক্রবার অফিস ছুটি থাকায় হিলটন তার বড় ভাই সাগর নাথের সঙ্গে সুন্দরবনে মাছ শিকারে গেলে বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা সহকারী বন সংরক্ষকসহ অন্য সদস্যদের মারধরে নৌকা থেকে পড়ে নিঁখোজ হয়েছিল হিলটন। ছয় দিন পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক লাশের সন্ধান পাওয়া যায়। হিলটন নিঁখোজ হওয়ার সময় তার পরনে কালো প্যান্ট ও গেঞ্জি ছিল। মরদেহেও একই পোশাক পাওয়া গেছে। মরদেহটি হিলটনেরই।
হিলটনের বাবা মিঠুন নাথ বলেন, বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আমার ছেলেকে মেরে বনের ভিতরে লুকিয়ে রেখেছিল। আমি এর সুষ্ঠু ও কঠোর বিচারের দাবি জানাচ্ছি প্রশাসনের প্রতি।
তবে বন বিভাগের কর্মকর্তারা হিলটনকে মারধর বা তাকে লুকিয়ে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তারা গণমাধ্যমকে বলে আসছেন, অভিযান চালানোর সময় হিলটন পানিতে পড়ে গিয়ে নিখোঁজ হন।