সরদার মোঃ হাসিবুর রহমান,বিশেষ প্রতিনিধি:
মানুষ শব্দটি একবচন হলেও মানুষ বলতে সমস্ত মানুষকে বোঝায় । নারী-পুরুষ, ধনি-গরিব, আমির-ফকির, সর্ব বর্ণ, ধর্ম, গোষ্টি নির্বিশেষে স্বর্গ প্রাপ্তির ধারনা আছে এবং দাবী করা হয় । অবশ্য নাস্তিক ব্যাতিত, স্বর্গ-নরকে তাদের কোন আগ্রহ নাই । যাহোক, ইসলাম ধর্ম মতে যে বিধানাবলী বা স্বর্গ প্রাপ্তির যে শর্তসমুহ বিধৃত আছে তার সারমর্ম এখানে উল্লেখ করা যায় । প্রাসঙ্গিক বিধায় বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে ইসলামিক বিধি বিধানের মূল উৎস কোরআন । এর পরে আছে হাদিস, ইজমা, কিয়াস ইত্যাদি ।
আল কোরআনের ১০৩ নং সূরা আসরের ০৩ নং আয়াতে পরকালে ক্ষতিগ্রস্থ না হওয়া বা বেহেস্তে যাওয়ার জন্য চারটি শর্ত পুরণ করতে হবে মর্মে উল্লেখ আছে, তা হলো (১) ঈমান, (২) নেক আমল (৩) সত্যের পথে ডাকা বা থাকা এবং (৪) ধৈর্যশীল হওয়া বা ধৈর্যধারনের উপদেশ দেওয়া ।
উল্লিখিত শর্তসমূহ যথাযথভাবে অর্জন ও প্রতিপালন করলে মানুষ দ্বীন ও দুনিয়ার ক্ষতি থেকে সুরক্ষা পাবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে অর্থাৎ স্বর্গপ্রাপ্তির পথ সুগম হবে।
বর্নিত শর্তাবলী সম্পর্কে যতটুকু সংক্ষেপে সম্ভব আলোচনা করলে বিষয়টি অনেকের কাছে সহজ এবং বোধগম্য হবে সন্দেহ নাই ।
১) ঈমান : যে চারটি শর্ত বা গুনাবলীর অর্জন করলে মানুষ ক্ষতিমুক্ত অবস্থায় থাকতে পারে তন্মধ্যে প্রথম গুনটি হলো ঈমান । এই শব্দটির অর্থ হচ্ছে স্বীকৃতি দেয়া । আর শরিয়তের পরিভাষায় ঈমানের অর্থ অন্তরে বিশ্বাস,মুখে স্বীকার এবং কাজ কর্মে বাস্তবায়ন ।
এখন প্রশ্ন হলো ঈমান আনা বলতে কিসের উপর ঈমান আনা বুঝায় । কুরআন মজীদে এর জবাবে সুস্পষ্ট ভাষায় বর্ননা করা হয়েছে যে :
ক) প্রথমত : এক আল্লাহকে স্বীকার এবং মানা । কিন্তু নিছক তার অতিত্বকে মেনে নেয়া নয় বরং তাঁকে এমনভাবে মানতে হবে যাতে বুঝা যায় তিনি একমাত্র প্রভু ও ইলাহ । তাঁর সর্বময় কর্তৃত্বে কোন অংশিদার নাই । তিনি একমাত্র হুকুম দাতা ও নিষেধকর্তা । তিনি সবকিছু দেখেন ও শোনেন ।
খ) দিতীয়ত : রাসুলকে মানা । হযরত মুহাম্মদ (সা:) শেষ নবী, আল্লাহর নিযুক্ত পথ প্রদর্শক এবং নেতৃত্বদানকারী হিসেসে মানা । তিনি যা শিক্ষা দিয়েছেন আল্লাহর পক্ষ থেকে দিয়েছেন, সবই সত্য এবং অবশ্যই পালনীয় বলে মেনে নেয়া । সাথে সাথে এটার স্বীকৃতি দেয়া যে আল্লাহপাক যুগে যুগে অনেক রাসুল ও নবী পাঠিয়েছেন তন্মধ্যে হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বশেষ নবী ও রাসুল । তাঁর পরে আর কোন নবী বা রাসুল আসবেন না ।
গ) তৃতীয়ত : ফেরেস্তাদের উপর ঈমান ।
ঘ) চতুর্থত : আল্লাহর কিতাব সমূহের উপর ঈমান । বিশেষ করে পবিত্র কুরআনের উপর ঈমান প্রতিষ্টা করা এবং এই কুরআনের নির্দেশ বাস্তবায়নে সদা সচেষ্ট থাকা ।
২) নেক আমল : ঈমানের পরে মানুষকে ক্ষতি থেকে বাঁচানোর জন্য দ্বিতীয় যে গুনটি থাকা দরকার সেটি হচ্ছে সৎকাজ । কুরআনের পরিভাষায় একে বলা হয় আমাল সালেহা । সমস্ত সৎকাজ এর অন্তর্ভুক্ত ।
৩) সত্যের পথে ডাকা বা থাকা মুমিন মুসলিম ব্যাক্তিদের ইবাদত।
(৪) ধৈর্যশীল হওয়া বা ধৈর্যধারনের উপদেশ দেওয়া একজন মুমিন মুসলিম ব্যাক্তির দায়িত্ব।